ঢাকা,রোববার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪

বান্দরবানে জলকেলির মাধ্যমে শেষ হলো সাংগ্রাই উৎসব

মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, বান্দরবান ::   বাংলা বছরের শেষ দিন ৩০শে চৈত্র (১৩ই এপ্রিল) মঙ্গল শোভাযাত্রার মধ্যে দিয়ে শুরু হয় ৪দিন ব্যাপী মারমাদের প্রাণের উৎসব ও সামাজিক অনুষ্ঠান সাংগ্রাই। অনুষ্ঠানে জলকেলি (পানি খেলা) ছাড়াও ঘিলা খেলা, নদীতে ফুল ভাসানো, বুদ্ধ মূর্তি স্লান, বয়োজ্যেষ্ঠ পূজাসহ বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। আদি আচার-অনুষ্ঠান, কৃষ্টি-সংস্কৃতি ঐতিহ্য ধারায় এবারও সাংগ্রাই উৎসব পালন করছেন পাহাড়ী মারমা সম্প্রদায়।

আর ঐতিহ্যবাহী জলকেলি (পানি খেলা), বৌদ্ধমূর্তি স্নান, হাজারো মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্জ্বলন, পিঠা তৈরিসহ আনন্দ-উল্লাসে মেতে উঠে পাহাড়ীরা। তারা একে অপরকে গায়ে পানি বর্ষণের মাধ্যমে বর্ষবরণ ও বিদায়ের পাশাপাশি পূর্বের সকল ভুুটিত্রুটি ও গ্লানী ধুয়ে মুছে ফেলে। মারমাদের আদি বৈচিত্র্যময় এ অনুষ্ঠান দেখতে বান্দরবানে ঢল নেমেছে দেশী-বিদেশী পর্যটকদের। জলকেলি (পানি খেলা) উৎসব, বৌদ্ধ বিহারগুলোতে সমবেত প্রার্থনা এবং দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনায় শেষ হয় পাহাড়িদের ৪দিন ব্যাপী এ সাংগ্রাই উৎসব।

আদিবাসী মারমা সম্প্রদায় সাংগ্রাই (বৈসাবী) উৎসবকে স্বাগত জানিয়ে ১৩এপ্রিল শুক্রবার বান্দরবান শহরে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মধ্যদিয়ে এর আনুষ্ঠানিকতা শুরু করে। রবিবার বিকালে বান্দরবান রাজার মাঠে এবছরের সবচেয়ে বড় ঐতিহ্যবাহী জলকেলি উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। বান্দরবানে মারমা সম্প্রদায়ের সাথে এসময় জলকেলি উৎসবে অংশ নেয় পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর এমপি। এছাড়াও জেলা প্রশাসক মোঃ আসলাম হোসেন, পুলিশ সুপার মোঃ জাকির হোসেন মজুমদার, পৌর মেয়র মোহাম্মদ ইসলাম বেবীসহ বিভিন্ন অফিসের কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন তরুণ-তরুণীরা।

স্থানীয়রা জানায়, সাংগ্রাই হচ্ছে আমাদের সামাজিক উৎসব। এ উৎসবে আমরা পানি খেলা খেলেছি। বুদ্ধ মূর্তিকে স্লান করিয়েছি। পুরো চারদিন খুব মজা করেছি আমরা এ উৎসবকে ঘিরে।

মারমা তরুনী ডমেপ্রু মারমা বলেন, প্রথম দিন আমরা র‌্যালী মাধ্যমে এ উৎসবটি শুরু করেছি। পরে বয়ষ্কপূজা, বৌদ্ধ মূর্তি স্লান ও মূল আর্কষণ পানি খেলা খেলেছি। আমরা বিশ্বাস করি এ পানি উৎসবের মাধ্যমে আমাদের আগের সকল পাপ ধুয়ে মুছে যায়।

সাংগ্রাই উৎযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক কো কো চিং মারমা বলেন, এ বছর আমরা অনেক সুন্দর ভাবে আমাদের এ উৎসব উদযাপন করতে পেরেছি। এবারে আমাদের কোন সমস্যা হয়নি।

পাহাড়িরা বছরের শেষের ১দিন এবং নতুন বছরের প্রথম ৩দিন বৈচিত্র্যময় নানা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিদায়ী বছরের সকল পাপাচার ও গ্লানী ধুয়ে মুছে দিতে ও নতুন বছরকে বরণ করে নিতে যুগ যুগ ধরে এ বৈসাবি উৎসব পালন করে আসছে।

পাঠকের মতামত: